

শুক্রবার ● ২২ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » হাঁস পালনে আলোর মুখ দেখছেন মাগুরার তরুন যুবকেরা
হাঁস পালনে আলোর মুখ দেখছেন মাগুরার তরুন যুবকেরা
মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা জেলায় কিছু তরুন যুবক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশি হাঁস পালন করে আলোর মুখ দেখছেন । কেউ নিজের মাছের পুকুরে,কেউ পতিত জমিতে ঘেরে মাছ চাষের পাশাপাশি এ হাঁস পালন করে হচ্ছেন স্বাবলম্বী। স্বাবলস্বী হওয়া তাদের এ হাঁস পালন দেখে জেলার অনেক বেকার যুবক ধুকছেন হাঁস খামার করতে।
মাগুরা সদরের মঘি ইউনিয়নের হাঁস চাষী আকিদুল ইসলাম জানান, ৪ একর জমির একটি দীঘিতে আমি প্রথমে মাছ চাষ শুরু করি। কিছুদিন পরেই আমি চাষ সফল হই। পাশাপাশি মাছ চাষের সাথে শুরু করি দেশি ক্যাম্বেল হাঁস পালন। বর্তমানে আমার খামাওে ১ হাজার হাঁস আছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আমি তাদের নিয়মিত পরিচর্যা করি। প্রতিদিন এ হাঁস খামার থেকে ৪শ’ থেকে ৪শ’৫০টি ডিম আসে। বাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা খামার থেকে ডিম নিয়ে যায়। আমি হাঁস চাষে পেয়েছি সফলতা । আমার খামার দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক এ চাষে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে ।
সদরের চাউলিয়া ইউনিয়নের সিরিজদিয়া বাওড়ে অন্য হাঁস চাষী সোহেল জানান,আমি ফরিদপুর রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছি। নিজের পড়াশুনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই ভাবলাম পড়াশুনার পাশাপাশি বেকার না থেকে নিজের গ্রামের বাওড়ে হাঁস চাষ করি। সেই থেকে শুরু আজ অবদি একটানা খাটুনি। আমি জেলার প্রাণী সম্পদ অফিসে হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করতে যায়। কিন্তু তাদেও মেশিন নষ্ট থাকায় তারা আমাকে বাচ্চা দিতে পারেনি। পরে খুলনার দৌলতপুর থেকে হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করে খামাওে পরিচর্যা শুরু করি । বর্তমানে হাঁসের ভ্যাকসিন সংকট থাকায় এ চাষে অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। হাসেঁর ভ্যাকসিন দিতে পারলে তারা হয় আরো র্দীঘস্থায়ী ও সবল। আমার খামারে বর্তমানে ৪শ’ চাষ পালন করছি। নিয়মিত পরিচর্যা ও যথাসময়ে খাদ্য দেওয়াই হলো চাষের সফলতা। এ চাষে আমি পেয়েছি সফলতা। আমি অনেক বেকার যুবককে এ চাষে উদ্ধুদ্ধ করছি। সরকার যদি আমাদেও মতো এ রকম বেকার যুবকদের ঋণ প্রদান কওে তাহলে দেশের অনেক যুবক এ চাষে এগিয়ে আসবে।
সদরের চাঁদপুর গ্রামের দুবাই ফেরত যুবক আশরাফুল বলেন, পরিবারের সহযোগিতার জন্য বিদেশ গিয়েছিলাম । সেখানে অনেক পরিশ্রম করেছি কিন্তু কোন সফলতা পায়নি। তাই বেকার হয়ে দেশে ফিরে নিজের ২ একর পুকুরে দেশি হাঁস পালন শুরু করি। এ হাঁস চাষে আমার বাড়তি কোন পরিচর্যা করতে হয় না। পুকুরের শামুক,লতা,পাতা ও প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে তারা বড় হচ্ছে। আজ এ হাঁস পালন করে আমি আমার পরিবারের মুখ উজ্জল করছি। সরকার সহযোগিতা পেলে আমি আরো স্বাবলম্বী হবো।
জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১২০ টি হাঁেসর খামার রয়েছে। বেকার যুবকদের উদ্ধুদ্ধ,প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জেলায় খামার বাড়াতে চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে এ সব খামার দেখভালের জন্য কাজ করছে মাঠকর্মীরা। বর্তমান সরকার বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করতে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। প্রাণী সম্পদ দপ্তর বেকার যুবকদের বর্তমানে ৪% হারে ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে।