শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

SW News24
শনিবার ● ৭ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় অসময়ের তরমুজ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় অসময়ের তরমুজ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা
৭৫৬ বার পঠিত
শনিবার ● ৭ অক্টোবর ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ডুমুরিয়ায় অসময়ের তরমুজ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা

---

অরুন দবেনাথ, ডুমুরিয়া।
বৈখাশের খর-তাপে তৃষ্ণার্ত মানুষের শরীর-মন জুড়ায় ‘তরমুজ’। কিন্তু এই শরৎ কালেও ডুমুরিয়া উপজেলার কদমতলা-কাকমারি-বাগদাড়ি-খরসন্ডাসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা তাদের চিংড়ি ঘেরের বেড়ীবাঁধে বাণিজ্যিক ভাবে তরমুজ ফলিয়ে(চাষ করে) কৃষি ক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
সরেজমিনে ডুুমুরিয়ার বিভিন্ন গ্রামে তরমুজ চাষিদের খামার দেখে ও বাজারে ফল বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার অনেক কৃষকই বর্ষার শুরুতে তাদের চিংড়ি ঘেরের ভেড়ি বাধে চারা রোপন করে পানির ওপর মাচা(বান) দিয়ে অসময়ে তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছে। আর চলতি শরৎ কাল তথা সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে ডুমুরিয়া বাজারে বা বাসস্ট্যান্ডে ফল বিক্রেতাদের দোকানে সাদা-কালো-ডোরাকাটা রং’র ‘তরমুজ’ বিক্রি হতেও দেখা যাচ্ছে। অসময়ে তরমুজ বাজারে দেখে অসখ্য মানুষের মুখে মুখে এ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হতেও দেখা যাচ্ছে। আর বিশেষ করে ডুমুরিয়ার চিংড়ি ঘেরে সবজি চাষিদের মধ্যে ‘নতুন আশা’ জাগিয়েছে এই তরমুজ।

---গত বুধবার সকালে ডুমুরিয়া উপজেলার মধ্যে কৃষি তথা সবজি চাষে ঐতিহ্যবাহি শোভনা ইউনিয়নের কদমতলা বিলে দিপঙ্কর মন্ডলের তরমুজ খেতে গেলে তার ১২ বিঘার জমির চিংড়ি ঘেরের পূর্বপাশের বেড়ী সংলগ্ন লম্বা মাচায় অসংখ্য ছোট-বড় তরমুজ ঝুলতে দেখা যায়। কোনোটা ডোরাকাটা আবার কোনোটা সাদাটে রং’র। বড় তরমুজগুলো ছিড়ে পড়া ঠেকাতে নেটের ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে মাচার আড়ার সঙ্গে বেধে রাখা হয়েছে। পানিতে নেমে ছবি তোলার সময় বড় বড় তরমুজ দেখে ছেড়ার লোভ ঠেকানো বেশ কঠিন ছিলো।
অসময়ে বাণিজ্যিক ভাবে তরমুজ চাষে উদ্যোগী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে চাষি দিপঙ্কর মন্ডল (৫৫) বলেন, গত বছর ডুমুরিয়া বাজারে বিল্লারের বীজের দোকানে টমেটো-কপির বীজ কিনতে যেয়ে দেখি বীজের প্যাকেটের গায়ে বড়-বড় তরমুজের ছবি ঝুলছে। দোকানদার বললো এ গুলো অসময়ের তরমুজ বীজ। অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে চাষ করতে হয়। তখন ১’শ টাকায় এক প্যাকেট বীজ কনে এনে চাষ করে ৪-৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছিলাম। তখন আমরা দেখলাম অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ঘেরের বেড়ীতে তরমুজ চাষ করা বেশ লাভ জনক হবে। তাই এ বছর বাণিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু করেছি। শ্রাবণের শুরুতেই মাচা-সহ মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে ৮০টি মান্দায় ২টি করে মোট ১৬০টি চারা রোপন করি। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। সব গাছেই বেশ ফলন ধরেছে। কিন্তু ফল বড় করার স্বার্থে ৩ থেকে ৪টি রেখে বাকিগুলে কেঁটে ফেলেছি। তাছাড়া তরমুজের ভারে মাচাও রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে তরমুজ কাটা শুরু করেছি। ৬০ টাকা কেজি দরে এ পর্যন্ত ৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করেছি।---

এখনও গাছে ৪ শতাধিক ফল আছে। প্রতিটা তরমুজ ওপরে ৮ কেজি নিচে ৫ কেজি ওজন হয়েছে। ইতোমধ্যে ডুমুরিয়া বাজারের অনেক ব্যাপারি আমাদের তরমুজ ৫০ টাকা কেজি দরে কিনতে চাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বানে(মাচা) তরমুজ দেখে এই বিলের আজিত রায়, সন্দিপ মল্লিক-সহ কয়েকজন পরীক্ষামূলক চাষও করেছে। তবে উপজেলা কৃষি অফিস কখনও আমাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। এছাড়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের বাগদাড়ি গ্রামের গোলাম জোয়াদ্দার(৪৫) বলেন, অন্যের মুখে শুনে এবছর ৭-৮টা মান্দা দিলাম। প্রত্যেকটা গাছে ১০-১২টা করে তরমুজ হয়ছে। এ পর্যন্ত ৪০টাকা কেজি দরে ৮-১০টা বিক্রে করিছি। এখনও গাছে ৭০-৮০-টা আছে। কালো রং’র এই তরমুজগুলো ৩-৪ কেজি করে ওজন হয়ছে। ছোটবন্দ গ্রামের মৃতুঞ্জয় মন্ডল(৩০) বলেন, এই অসময়ের তরমুজ লাগায়ে এই পর্যন্ত ২ শতাধিক তরমুজ বিক্রি করিছি। আগামিতে বড় করে চাষ করবো।
এ প্রসঙ্গে শোভনা ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত বৈদ্য বলেন, সবজির জন্য খ্যাতি সম্পন্ন শোভনার চাষিরা এবার অসময়ের তরমুজ চাষে সফল হয়েছে। যা দেখে আগামি দিনে অন্য কৃষকরাও উপকৃত হবে। তবে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় তরমুজ চাষের বিষয় না জানার কথা স্বীকার করে বলেন, শুনেছি কদমতলায় একজন চাষ করেছে। তবে যখন জানলাম তখন খোঁজ নেবো। খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবদুল লতিফ বলেন, আমি চুয়াডাঙ্গায় থাকতে অসময়ে তরমুজ দেখেছিলাম। এখন ডুমুরিয়ায় হচ্ছে শুনে খুবই ভাল লাগলো। আমি কৃষির এই সুযোগকে সম্প্রসারণ ঘটানোর উদ্যোগ নেবো। ডুমুরিয়া-ফুলতলার সাংসদ তথা মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, এটা খুবই খুঁশির খবর, আমাদের চাষিরা অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছে। আমি তরমুজ চাষকে উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।





কৃষি এর আরও খবর

মাগুরায় মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত মাগুরায় মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
খুলনায় স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার খুলনায় স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার
পাইকগাছায় চিংড়ির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় চিংড়ির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত
নড়াইলে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন নড়াইলে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন
পাইকগাছায় উচ্চ ফলনশীল পাট বীজ উৎপাদন, চাষ ও পাট পচনের আধুনিক পদ্ধতি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় উচ্চ ফলনশীল পাট বীজ উৎপাদন, চাষ ও পাট পচনের আধুনিক পদ্ধতি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
নড়াইলে উন্নত জাতের ধানকর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত নড়াইলে উন্নত জাতের ধানকর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
মাগুরায় কৃষকদের মাঝে গামছা,কাস্তে মাথাল বিতরণ মাগুরায় কৃষকদের মাঝে গামছা,কাস্তে মাথাল বিতরণ
পাইকগাছায় ৩ দিন ব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন পাইকগাছায় ৩ দিন ব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
পাইকগাছায় এক বোটায় ২০টি লাউ! পাইকগাছায় এক বোটায় ২০টি লাউ!
মাগুরায় তীব্র গরমে ধানে চিটা ; শঙ্কিত কৃষক মাগুরায় তীব্র গরমে ধানে চিটা ; শঙ্কিত কৃষক

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)