শিরোনাম:
পাইকগাছা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
সোমবার ● ১৬ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা গাছ বাগান গড়ে উঠেছে
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা গাছ বাগান গড়ে উঠেছে
১০৯৬ বার পঠিত
সোমবার ● ১৬ জুলাই ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা গাছ বাগান গড়ে উঠেছে

---
প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ॥
পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা গাছ বাগান গড়ে উঠেছে। কপোতাক্ষ নদের তীরে কর্দমাক্ত মাটিতে গড়ে ওঠা গোলপাতা বাগান দেখলে মনে হয় এটি মিনি সুন্দরবন। পতিত জমিতে গড়ে ওঠা গোলপাতা বাগান থেকে প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা গোলপাতা বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীর চরে বিচ্ছিন্নভাবে গোলপাতা গাছ জন্ম নিলেও একমাত্র মোসলেম উদ্দীনের জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা বাগান গড়ে উঠেছে।
জানাগেছে, উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের পাশে রাড়–লী গ্রামের আলহাজ্ব মোসলেম আলী সরদারের একটি গোলপাতা গাছ বাগান রয়েছে। কর্দমাক্ত পতিত এক বিঘার বেশি জমিতে গোলপাতা বাগান গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর অগ্রাহণ-পৌষ মাসে গোলপাতা কাঁটা হয়। বছরে ৪০ থেকে ৫০ পোন গোল আহরণ করা যায়। যার মূল্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এ বিষয় মোসলেম আলী জানান, তার দাদার আমল থেকে গোলপাতা বাগান দেখে আসছে। সে সময় প্রায় ৩ বিঘা জমিতে গোলপাতা বাগান ছিল। সে সময় কপোতাক্ষ নদের জোয়ার-ভাটায় গোলপাতা বাগানে পানি ওঠা-নামা করতো। বেড়িবাধ হওয়ার পরে নদের পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে গোলপাতা আগের মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে না। তাছাড়া, মোসলেম সরদারের পিতা মৃত সাদের আলী সরদার গোল বাগান থেকে ১ বিঘা জমি সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য দান করেন। এতে ১ বিঘা গোল বাগান কেটে ফেলা হয় এবং পারিবারিক বিভিন্ন কাজের জন্য গোলপাতা বাগান ছোট হয়ে আসছে। পতিত জমিতে গড়ে ওঠা গোলবাগান থেকে গোলপাতা বিক্রির পরে মোসলেম আলী আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে উপকূলীয় এবং মোহনা এলাকায় একপ্রকার পাম জাতিয় উদ্ভিদ জন্মায়। যা এক প্রকার পাম জাতীয় উদ্ভিদ, যাদেরকে নিপা পাম নামে ডাকা হয়। এই পামে একটি মাত্র প্রজাতি যাদেরকে ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই উদ্ভিদটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। ভারত ও বাংলাদেশে গোলপাতা, সিঙ্গাপুরে আত্তাপ, ফিলিপাইনে নিপা, ভিয়েত নামে দুয়ানুয়ক, শ্রীলঙ্গায় জিংপল, মায়নমার দানী নামে ডাকা হয়।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিত অঞ্চলের লোকেরা ঘরের চালা তৈরীতে ব্যাপকভাবে গোলপাতা ব্যবহার করে থাকেন। এ জন্য এ অঞ্চলের গোলপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মূলত সুন্দরবন থেকে আহরণকৃত গোলপাতা এ অঞ্চলের সরবরাহ করা হয়। ৫ বছর বয়সী গোলপাতা গাছ থেকে বছরে ১ বার গোলপাতা কাটা যায়। শুকনো মৌসুমে সাধারণত অক্টোবর থেকে ফেব্র“য়ারী মাসে গোলপাতা কাটা হয়। গোলপাতা গাছের মাঝখানে কচিপাতা ও তার চারিদিকে দুইটি পাতা রেখে সব পাতা কেটে রাখা হয়। গোলফল তালের শাসের মত খাওয়া যায়। এতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। যা চর্মরোগ নিরসনে সাহায্য করে। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা মোসলেম আলীর গোলপাতা বাগান দেখে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গোলপাতা বাগান গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। সুন্দরবনের গোলপাতা গাছ পর্যায়ক্রমে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন ও সংরক্ষণের অভাবে গোলপাতা গাছ বিলুপ্তির কারণ বলে জানাগেছে। এ অবস্থায় সুন্দরবনের গোলপাতা গাছ সংরক্ষণের জন্য উপকূল অঞ্চলের নদ-নদীর চরে সরকারিভাবে গোলপাতা বাগান গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা। এ অঞ্চলের খালে, বিলে, নদীর তীরে বিচ্ছিন্ন ভাবে গোলপাতা গাছ জন্মাতে দেখা যায়। গোটা দক্ষিণ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার মাটি লবণাক্ত ও পলিযুক্ত হওয়ার কারণে এ এলাকায় গোলপাতা গাছ বেশি জন্মায়।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)