শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

SW News24
মঙ্গলবার ● ১২ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস
২৭ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১২ আগস্ট ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস

---ফটোগ্রাফি একটি আধুনিক শিল্প হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রিক শব্দ ফস ও গ্রাফ শব্দ থেকেই ফটোগ্রাফি শব্দটি এসেছে। এখন প্রায় সবার কাছেই অন্তত স্মার্টফোন রয়েছে। ফলে সময়ের সঙ্গে সবাই ফটোগ্রাফি হয়ে উঠেছে। সব বয়সের মানুষের চাহিদার অন্যতম একটি বিষয় ফটোগ্রাফি। কেউ শখ করে, আবার কেউ পেশা হিসেবেই বেছে নিয়েছেন ফটোগ্রাফিকে।

১৯ আগস্ট  বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। শখের বসে ছবি তুলে বা পেশাদার ফটোগ্রাফার যাই হোকনা কেনো আজ সারা পৃথিবীতে সবাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করছে বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস।

১৮৩৭ সালে নাইসফোর নিপেক ও লুইস ডাগুয়েরে ডাগুয়েরিওটাইপ ফটোগ্রাফিক সিস্টেম আবিষ্কার করেন। এই উপায়ের নাম হল ডাগুয়েরিওটাইপ। প্রতি বছর ১৯ আগস্ট সারা পৃথিবীতে সবাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করে বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস। এই দিনে, ফটোগ্রাফি শিল্পের উদ্ভাবন এবং এর ইতিহাস উদযাপন করা হয়।

১৮৩৭ সালে নাইসফোর নিপেক ও লুইস ডেগুরে ডেগুরে টাইপ ফটোগ্রাফিক সিস্টেম আবিষ্কার করেন। এই উপায়ের নাম হল ড্যাগুইররিয়ো টাইপ। বিজ্ঞানী লুই দাগের সর্বপ্রথম ছবি তোলার ব্যবহারিক এ উপায় আবিষ্কার করেন। তার নাম অনুসারেই ছবি তোলার এই উপায়ের নাম দেয়া হয় ড্যাগুইররিয়ো টাইপ ফটোগ্রাফি। তখন থেকেই ফটোগ্রাফিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। ১৮৩৯ সালের ১৯ আগস্ট সবার প্রথম ফরাসি সরকার ১৯ আগস্টকে বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। ড্যাগুইররিয়ো টাইপ ফটোগ্রাফি মুক্তি লাভের সেই দিনটিকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে প্রতি বছরের এই দিন বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে থাকে।

ডগুইরিয়োটাইপ প্রক্রিয়াটি ফটোগ্রাফির ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার, যা দিয়ে প্রথমবার স্থির চিত্র ধারণ করা সম্ভব হয়েছিল। বিজ্ঞানী লুইস ডাগুয়ের সর্বপ্রথম ছবি তোলার ব্যবহারিক এ উপায় আবিষ্কার করেন।

সময়ের আবর্তনে যুগে যুগে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে ও হচ্ছে। যখন ক্যামেরা তৈরি হয়নি এমনি কি কাগজও তখনও মানুষ মাটি, পাথর বা কাঠে খোদাই করে বিভিন্নভাবে ছবি এঁকে নানা দৃশ্য ধরে রাখত। আধুনিক যুগে বাংলাদেশে আলোকচিত্রের ধরণটাই অনেকখানি বদলে গেছে। এখন অনেক নাম করা ফটোগ্রাফার বাংলাদেশে আছেন। আলোকচিত্র একটি সৃজনশীল কাজ। ফটোগ্রাফি শুধু এখন আর শখই নয়, অনেকে এটাকে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। এই শিল্পকে আরও প্রতিষ্ঠিত করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে ফটোগ্রাফিক সোসাইটি। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ফটোগ্রাফি অনেক প্রাধান্য পায়। এই আলোকচিত্র নিয়ে হয় অনেক প্রতিযোগিতা।

মূলত আলোকচিত্র বা ফটোগ্রাফি বলতে কোন আলোকসংবেদী তলের উপর আলো ফেলার মাধ্যমে তৈরি ছবিকে বোঝায়। আলোকসংবেদী তলটি ফটোগ্রাফিক ফিল্ম হতে পারে আবার সিসিডি বা সিমস চিপের মত কোন ইলেকট্রনিক ছবি নির্মাণকারীও হতে পারে। সাধারণত ক্যামেরা দিয়ে আলোকচিত্র নেয়া হয়। এখানে ক্যামেরার লেন্স বড় ভূমিকা পালন করে। এই আলোকচিত্র নেয়ার বা তোলার পদ্ধতিকে ফটোগ্রাফি বলে। একে আলোকচিত্র শিল্পও বলা যায়।পৃথিবীর সভ্যতার উৎকর্ষে যে কয়টি মাধ্যম অন্যতম, তার মধ্যে ফটোগ্রাফি স্বতন্ত্র অবস্থানে। বিভিন্ন সময়ে অনেক ফটোগ্রাফার তাদের নিজেদের তোলা ছবি দিয়ে বিশ্বে আলোচনার জায়গা করে নেন। কিছু কিংবদন্তি মানুষের নিরবিচ্ছিন্ন ত্যাগ, শ্রম ও এই শিল্পের প্রতি অগাত ভালোবাসায় বিনির্মিত হয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- হেনরী কার্টিয়ার ব্রেসো, রবার্ট কাপা, সেবাস্তিও সালগাদো, রঘু রায়, কেভিন কার্টার, ম্যালকম ব্রাউনি, নিক আট, আলবার্ট করদা ও অনেকেই।

আলোকচিত্র হচ্ছে সময়ের দর্পণ। এমনকি ইতিহাসের সাক্ষী। একটি ছবির অনেক ক্ষমতা। কিছু না বলেও একটা ছবি দিয়ে অনেক সত্যিকে তুলে ধরা যায়। ফটোগ্রাফি হলো এমন একটি বড় উদ্ভাবন যা বিশ্বকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে।

আজকের দুনিয়ায় মিডিয়া থেকে শুরু করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও ফটোগ্রাফি তথা আলোকচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, কথার চেয়ে ছবি দিয়ে মনের গভীর অভিব্যক্তি আরো সুদৃঢ় হয়ে ওঠে। সময়ের আবর্তে হারিয়ে যায় অনেককিছু। বাস্তবতার পর্দায় ঢেকে যায় পুরনো স্মৃতি। তারপরও জীবনের স্বর্নালী মুহূর্তকে ধরে রাখতে কার না মন চায়।

বিজ্ঞানের অবদানে আর প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় পর্যায়ক্রমে মানুষের হাতে পৌঁছেছে নানা মাত্রিকতার অত্যাধুনিক ক্যামেরা। সাটার টিপে দিলেই ক্লিক ক্লিক ফ্রেমে বন্দী হয় অসংখ্য ছবি। ক্যামেরা শব্দটি এসেছে একটি ল্যাটিন শব্দ কামারা থেকে। যার বাংলা অর্থ ঘর। আর যেই যন্ত্রটি আজ ক্যামেরা নামে পরিচিত হয়েছে তার নাম আসলে ক্যামেরা অবস্কুরা। এটিও একটি ল্যাটিন শব্দ। যার বাংলা অর্থ অন্ধকার। অর্থাৎ অন্ধকার ঘর কিন্তু ফটোগ্রাফি একটি ইংরেজি শব্দ। যার বাংলা মানে  আলো দিয়ে আঁকা।

ফটোগ্রাফি হলো মুখে না বলা গল্প, যা সুন্দরভাবে সময়, আবেগ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ইত্যাদি অনেক মুহূর্তের সত্যতাকে ক্যাপচার করে। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে লুকিয়ে আছে একজন ফটোগ্রাফার। কোনো কিছু লিখে বা বলে যতো সহজে প্রকাশ করা যায়, ছবি দিয়ে মনের গভীর অভিব্যক্তি আরো ভালো করে বোঝানো যায়। মানুষের মনে কথার থেকে ছবি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। ফটোগ্রাফি শুধু ছবি তোলার মাধ্যম নয়, এটি একটি শক্তিশালী ভিজ্যুয়াল ভাষা যা আবেগ, স্মৃতি এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। আর ফটোগ্রাফি হলো মানুষের একধরনের প্যাসন। ফটোগ্রাফি বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে এবং মানুষকে একত্রিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)