

শনিবার ● ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » পূর্ব সুন্দরবনে তিন মাসে ১৪৮ জেলে আটক, ফাঁদসহ ২৪২ টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ
পূর্ব সুন্দরবনে তিন মাসে ১৪৮ জেলে আটক, ফাঁদসহ ২৪২ টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ
পূর্ব সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞার তিন মাসে বনরক্ষীদের অভিযানে ১৪৮ জন আটক হয়েছেন। এ সময়ে জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ হরিণ ধরার ফাঁদ, হরিণের মাংশ ও ২৪৮ টি ট্রলার। আটক ব্যক্তিদের বন অপরাধের মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও মৎস্য সম্পদের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য গত ১ জুন থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ ও মাছ ধরায় তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। এই সময় পূর্ব সুন্দরবনে হরিণসহ বন্য প্রাণী পাচার রোধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন বনরক্ষীরা।
অভিযানে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে হরিণ শিকারি আটকসহ অসংখ্য হরিণ ধরার মালা ফাঁদ, নৌকা, ট্রলার, কাঁকড়া ধরার চারু, কীটনাশক, চিংড়ি শুঁটকি জব্দ করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে একশ্রেণির জেলে বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে সুন্দরবনে গিয়ে মাছ ধরেন। এঁদের ধরতে গত মাসে জুলাই বনরক্ষীরা পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের বনাঞ্চলে ৫৮টি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে সুন্দরবনের দুবলারচর, কচিখালী, শেলারচর, কটকা, কোকিলমনি, চরাপুটিয়া, আন্ধারমানিকসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৪৮টি মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা জব্দ করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় ৭০ জন জেলেকে। অনেকে বনের মধ্যে পালিয়ে যান। আটক জেলেদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দিয়ে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া জুলাই মাসের অভিযানে পূর্ব সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৩ হাজার ৫৯৮ ফুট হরিণ ধরার মালা ফাঁদ, ছিটকা ফাঁদ ২০টি, মাছ ধরার অবৈধ জাল ৮২ হাজার মিটার, কীটনাশক ১৩ বোতল, বিষযুক্ত মাছ ৩১০ কেজি, শুঁটকি মাছ ২২ বস্তা, কাঁকড়া ৩৭৫ কেজি, নিষিদ্ধ কাঁকড়া ধরা চারু জব্দ করা হয়েছে ১ হাজার ২৮০টি। একই সময়ে বন অপরাধের মামলা হয়েছে ৪৩টি। মামলার আসামির সংখ্যা ১৩৪ বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
জানতে চাইলে পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, জুন মাস থেকে পূর্ব সুন্দরবনে চলমান সাঁড়াশি অভিযানের সফলতা পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে করাগারে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে অসংখ্য হরিণ ধরার ফাঁদ।
এর ফলে অনেক হরিণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। তিনি সুন্দরবন ও বন্য প্রাণী রক্ষায় বনরক্ষীদের সহায়তায় স্থানীয় জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।