শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » বিবিধ » ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন মোল্যা নবুয়ত আলী
প্রথম পাতা » বিবিধ » ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন মোল্যা নবুয়ত আলী
৪০৫ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন মোল্যা নবুয়ত আলী

---

এস  আলম তুহিন , মাগুরা থেকে :

১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলা’র দাবিতে দেশে যখন দুর্বার আন্দোলন শুরু হয় তখন মাগুরার শ্রীপুরে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে শ্রীপুর বাহিনীর উপ-অধিনায়ক ও বর্তমান জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোল্যা নবুয়ত আলী। এ কারণে তিনি স্কুল থেকে শাস্তি পেয়েছিলেন। তাকে বহিষ্কাকারও করা হয়েছিলো একই কারণে। শ্রীপুর এমসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র থাকা কালে তিনি ৯ম ও দশম শ্রেণির ছাত্রদের নেতৃত্বে অন্যান্য ছাত্রদের সাথে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন।

এ সময় নাকোল স্কুলে  রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ব্যাপক মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হতো। মিছিলে অংশ নেয়ার কারণে হামিদুজ্জামান এহিয়া ও সোহরাব হোসেনসহ অনেকে এ আন্দোলনে অংশ নেন। অনেকের  নামে মামলা হয়। তারা বেলুচ আর্মড ফোর্সের হাতে আটক হয়ে জেল খেটেছিলেন। এ ছাড়া ভাষা আন্দোলনের পরে এমসি পাইলট স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা মাতৃভাষা বাংলার কথা যাতে মনে করতে না পারে, সে জন্য সরকার সব সময় চেষ্টা করতো। আন্দোলনে অংশ নেয়ায় মোল্যা নবুয়ত আলীসহ কয়েকজন ছাত্রকে সে সময় বিদ্যালয়ের শৃংঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাস্তি দেয়াসহ বহিস্কার করা হয়। এর ফলে তিনি লেখা পাড়া থেকে বঞ্চিত হন। সে সময় লেখা পড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি নাড়–য়া ও মাগুরার একটি স্কুলে ভর্তির জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি আবাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। পরবর্তিতে তিনি ইন্টারমিডিয়েট ও বিএ পাশ করেন।

ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মোল্যা নবুয়ত আলী জানান, সে সময় শ্রীপুর সদর ও নাকোলে এলাকায় দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা ওই সময় রাষ্ট্রভাষা বাংলা  প্রতিষ্ঠার দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন করে। তখন এমসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসে বিভিন্ন সময় বাংলা ও উর্দু ভাষার পক্ষে বিপক্ষে তর্ক বিতর্ক চলত। সেই সাথে চলতো মিছিল মিটিং। এরই এক পর্যায়ে  পুলিশি বাঁধা উপেক্ষা করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদার দাবিতে স্কুলের একদল ছাত্র ব্যাপক বিক্ষোভ  মিছিল বের করে। যাতে তিনিও  ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাংলা ভাষার দাবিতে ব্যাপক জনমত গড়ে ওঠে।

মোল্যা নবুয়ত আলী ১৯৩৯ সালে শ্রীপুর উপজেলা বরিষাট গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৃত মোল্যা আজগর হোসেন ও মাতার নাম মৃত ডালিমননেছা বিবি। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়া মোল্যা নবুয়ত আলী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শ্রীপুর বাহিনীর ডেপুটি কামান্ডার হিসেবে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। তার জীবন কেটেছে দেশের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এ জন্য তিনি বহুবার জেল খেটেছেন। বর্তমানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের জেলা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১১ দফার দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেন। এ ছাড়া আগারতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হলে তাকে মুক্ত করতে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেন।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)