শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১

SW News24
বুধবার ● ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » পাইকগাছায় আবহাওয়া জনিত কারণে গাছিরা দেরিতে খেজুর গাছ পরিচর্যা শুরু করেছে
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » পাইকগাছায় আবহাওয়া জনিত কারণে গাছিরা দেরিতে খেজুর গাছ পরিচর্যা শুরু করেছে
৭৯ বার পঠিত
বুধবার ● ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাইকগাছায় আবহাওয়া জনিত কারণে গাছিরা দেরিতে খেজুর গাছ পরিচর্যা শুরু করেছে

 ---

জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত বৃস্টির কারণে পাইকগাছাসহ দক্ষিণাঞ্চলে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণে গাছের পরিচর্চা দেরিতে শুরু হযেছে। সে কারণে প্রায় এক মাস পরে উপজেলার গাছিরা খেজুর গাছ পরিচর্চা শুরু করছেন। তাই  এখন খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে  পাইকগাছার গাছিরা। কালের বিবর্তনে উপকূলীয় এলকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। গাছ আর গাছির অভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুরের রস স্বাদ থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।

শীত মৌসুম এলেই পা্ইকগাছা উপজেলার সর্বত্র শীত উদযাপনে খেজুরের রসের মুখরোচক উপাদান তৈরি করা হয়। রসের চাহিদা থাকে প্রচুর। খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার গাছিরা। যারা খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য বিশেষভাবে গাছ কাটায় পারদর্শী স্থানীয় ভাষায় তাদেরকে গাছি বলা হয়। এ গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচা-ছোলা ও নল বসানোর কাজ শুরু করেছেন। তবে গাছের এক পাশের বাকল তুলে চেচে রাখায় মাথির নরম কান্ডে ছিদ্র করে গাছ নষ্ট করে দেয় পিপড়া ও কাঠবিড়ালি। এর ফলে এসব গাছ থেকে রস কম পাওয়া যায়।

শীতের দিন মানেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রস ও নলেন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধ। শীতের সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যায় না। আর খেজুর রসের পিঠা এবং পায়েস তো খুবই মজাদার। এ কারণে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষীর, পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাড়িতে খেজুর রসের তৈরি খাদ্যের আয়োজন চলে। শীতের সকালে বাড়ির উঠানে বসে সূর্যের তাপ নিতে নিতে খেজুরের মিষ্টি রস যে পান করেছে, তার স্বাদ কোনো দিন সে ভুলতে পারবে না। শুধু খেজুরের রসই নয় এর থেকে তৈরি হয় সুস্বাদু পাটালি গুড়। খেজুর গুড় বাঙালির সংস্কৃতির একটা অঙ্গ। নলেন গুড় ছাড়া আমাদের শীতকালীন উৎসব ভাবাই যায় না।

উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের মাঠের ক্ষেতের আইলে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে-অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে উঠেছে খেজুরের গাছ। যাহা অর্থনীতিতে আশীর্বাদ স্বরুপ। শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে এই উপজেলার শতাধিক পরিবার।

পাইকগাছা খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনে বেশ প্রসিদ্ধ। এ উপজেলায় যে রস, গুড় ও পাটালি তৈরি হয়, তা নিয়ে শীত মৌসুমে রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু হয়। সবাই ভেজাল মুক্ত গুড় পেতে চায়। শীত মৌসুম খেজুরের রস দিয়ে গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ তত বাড়বে। সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খেজুরের গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। উপজেলার তকিয়া গ্রামের গাছি আব্দুল মজিদ জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় একশত গাছ থেকে খেজুরের রস আহরণ করবেন। খেজুর গাছের রস, গুড়-পাটালি বিক্রয় করে খরচ বাদে প্রায় ৭০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ একরামুল ইসলাম জানান, উপকূল এলাকার এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছ রয়েছে। খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। ক্ষেতের আইলে ও পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকেরা গুড় উৎপাদন করে আরো বেশি লাভবান হবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)