

শুক্রবার ● ৩ অক্টোবর ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্যবসা-বাণিজ্য » পাইকগাছায় সুপারির হাট বাজারে জমে উঠেছে
পাইকগাছায় সুপারির হাট বাজারে জমে উঠেছে
খুলনার পাইকগাছায় গদাইপুর বাজারে সুপারি বেচা কেনার হাট জমে উঠেছে। এখন সুপারির ভরা মৌসুম চলছে। ফলে বাগান মালিক, খুচরা ও পাইকারী বিক্রেতারা সুপারি ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। উপজেলার গদাইপুর, আগড়ঘাটা, বাকা, নতুন বাজার, কপিলমুনিসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণে সুপারি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর সুপারির ফলন খুব বেশি ভাল হয়নি। ব্যবসাহীরা জানান, সুপারি পাকার শুরুতে দাম বেশী ছিলো, এখন দাম কিছুটা কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে,উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ৪শতটি। গাছ প্রতি ২ থেকে ৪ কাধি সুপারির ফলন ধরে। কোন কোন গাছে সর্বনিন্মে ৫০ থেকে ১৫০ আবার কোন কোন গাছে ৫শত থেকে ৬শত সুপারি ফলন হয়। লবণাক্ত এ উপজেলার ভূমির অবস্থান উচু ও বিলান, নিচু ও বিলান জমির পরিমাণ বেশী। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী,কপিলমুনি, রাড়ুলীতে সুপারি গাছের পরিমাণ বেশী। চাঁদখালী ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় সুপারি গাছ রয়েছে। বাকী ইউনিয়নগুলোতে গাছ নেই বললেই চলে।
বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন হাটে সুপারি সরবরাহ করে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে পাইকারী সুপারি ক্রয় করে এলাকার বাইরে মোকাম গুলোতে বিক্রি করছে। তাছাড়া স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরা সুপারি ক্রয় করে গুদামজাত করছে। যা পরে শুকিয়ে বা পানিতে মজিয়ে পরবর্তীতে বিক্রি করা হবে। গদাইপুর গ্রামের সুপারি বাগান মালিক শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর সুপারির ফলন খুব ভাল হয়নি তবে বাজার মূল্য ভাল। স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর বাজারে সুপারির পরিমাণ কিছুটা কম। সুপারির দাম উঠানামা করেছে, প্রথমে ৭শত থেকে ৮ শত টাকা কুড়ি বিক্রি হলেও এখন ২৫০ থেকে ৩শত টাকা দরে কুড়ি বিক্রি হচ্ছে। সুপারির হিসাব অঞ্চল হিসাবে ভিন্ন। এ এলাকায় এক কুড়ি ৫৫গোন্ডা অর্থাৎ ২২০টি সুপারি। ব্যবসায়ীরা স্থানীয় হাট-বাজার থেকে পাইকারী সুপারি কিনে বড়দল, সোলাদানা, শান্তাসহ পাশ্ববর্তী হাট-বাজারের আড়ৎ গুলোতে সুপারি বিক্রয় করেন।
সুপারি স্থানীয় সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। সুপারি ছাড়া পানের পূর্ণতার কথা ভাবা যায় না। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুপারি ব্যবহার হয়। সুপারি কাঁচা, শুকনা, মজানো-ভিজা পান পাতা দিয়ে মুড়িয়ে খিলি বানিয়ে খাওয়া হয়।অনেকের আবার শুধু সুপারি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠির এক দশমাংশ সুপারি খান। শিশু, নারী ও পুরুষ সুপারি ব্যবহার করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, সুপারি এ অঞ্চলের একটি অর্থকারী গুরুত্বপূর্ণ ফসল। তাছাড়া এ এলাকার সুপারির মানও ভালো। তবে লম্বা সুপারি গাছ গুলো মরে যাওয়ায় অথবা কেঁটে ফেলায় নতুন করে সুপারির বাগান তেমন একটা গড়ে উঠছে না। তাই কৃষি অফিস থেকে নতুন করে সুপারি বাগান তৈরীর জন্য বাগান মালিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।