শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ন ১৪৩২

SW News24
বুধবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » মুক্তমত » দর্শকদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম টেলিভিশন
প্রথম পাতা » মুক্তমত » দর্শকদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম টেলিভিশন
২৫ বার পঠিত
বুধবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দর্শকদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম টেলিভিশন

 --- প্রকাশ ঘোষ বিধান

টেলিভিশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম। টেলিভিশন একই সাথে দৃশ্য ও শ্রবণ উপাদান ব্যবহার করে যা এটিকে দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে এবং তথ্যের প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করে। এটি একই সাথে শব্দ ও দৃশ্য ব্যবহার করে দর্শকদের কাছে খবর, বিনোদন এবং বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেয়। যা এটিকে অত্যন্ত শক্তিশালী ও কার্যকর করে তোলে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশন সম্প্রচার দ্রুত সম্প্রসারিত হয়, যা বিজ্ঞাপন, প্রচার ও বিনোদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম হয়ে ওঠে। দর্শকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের ভূমিকায় আবর্তিত হয় টেলিভিশন। শুধু তাই নয়, কালক্রমে এটি হয়ে ওঠে একটি অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম। এটি সম্প্রচার, স্যাটেলাইট বা কেবল টিভির মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করে এবং বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি একটি প্রভাবশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, যা জনমত গঠন এবং সামাজিক পরিবর্তনেও ভূমিকা রাখে।

টেলিভিশন হলো একটি আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম যা ছবি ও শব্দ সম্প্রচার করে। এটি এমন একটি যন্ত্র যা বিশ্বের খবর, সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে মানুষকে অবগত রাখে এবং এর মাধ্যমে একই সাথে শব্দ ও ছবি দেখা ও শোনা সম্ভব। টেলিভিশন বিজ্ঞান, শিক্ষা, সংবাদ, বিনোদনসহ জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে, যার মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে নিজেদের ঘরে বসেই দেখতে পারি।

২১ নভেম্বর  বিশ্ব টেলিভিশন দিবস। ১৯২৬ সালের এই দিনে টেলিভিশন উদ্ভাবন করেন জন লোগি বেয়ার্ড। তাঁর এই উদ্ভাবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। টেলিভিশন উদ্ভাবনের এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সারা দেশে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস পালন করা হয়।

টেলিভিশন হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক অসাধারণ অবদান, যা বিনোদন ও তথ্যের এক শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। টেলিভিশন মূলত তিনটি অংশ নিয়ে কাজ করে: ক্যামেরা, শব্দ ও ছবিকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে।  ট্রান্সমিটার, এই সংকেতকে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে প্রেরণ করে। রিসিভার টিভি সেট, সংকেত গ্রহণ করে এবং তাকে পুনরায় শব্দ ও ছবিতে রূপান্তরিত করে। এর মাধ্যমে দূর থেকে কোনো দৃশ্য এবং শব্দ সরাসরি সম্প্রচার করা যায়। টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে রেডিও সিগন্যাল, স্যাটেলাইট বা কেবল টিভির মাধ্যমে একটি বিশাল দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারে। এটি সংবাদ, খেলাধুলা, এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সরবরাহ করে, যা এটি বিভিন্ন ধরনের দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলে।

টেলিভিশন একটি টেলিযোগাযোগ মাধ্যম যা চলন্ত ছবি ও শব্দ প্রেরণ করে। টেলিভিশন শব্দটি প্রাচীন গ্রিক টেলি (দূর) এবং লাতিন ভিশন (দর্শন) থেকে এসেছে। টেলিভিশন হলো এমন একটি যন্ত্র যা ছবি এবং শব্দকে দূর থেকে সম্প্রচার করে এবং গ্রহণ করে। এটি টেলি (দূর) এবং ভিশন (দর্শন) শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। টেলিভিশন বিনোদন, সংবাদ, শিক্ষা এবং তথ্যের একটি অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এটি একই সাথে ছবি দেখা এবং শব্দ শোনার সুবিধা দেয়। এটি গণমাধ্যম হিসেবে বিজ্ঞাপন, বিনোদন, সংবাদ এবং খেলাধুলা সম্প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হয়।

টেলিভিশন বিনোদন, শিক্ষা ও তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, তথ্যচিত্র এবং বিজ্ঞান বিষয়ক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে। বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া সংবাদ, বর্তমান ঘটনাপ্রবাহ এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে মানুষকে আপডেট রাখে। শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান শিশুদের সামাজিক ও শেখার দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে। টেলিভিশন বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র এবং সংগীতের মাধ্যমে প্রচুর বিনোদন প্রদান করে।

বাংলাদেশে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশন ১৯৬৪ সাল থেকে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা প্রথম পাকিস্তান টেলিভিশন নামে চালু হয়েছিল। এটি ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান টেলিভিশন নামে যাত্রা শুরু করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এটিকে জাতীয়করণ করে বাংলাদেশ টেলিভিশন নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৮০ সালে রঙিন সম্প্রচার শুরু করে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন টেলিভিশন সম্প্রচার ছিল। বিটিভি নাটক, প্রামাণ্যচিত্র, সংগীত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং তথ্য বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাংলায় ও ইংরেজিতে সম্প্রচার করে।

টেলিভিশন এর অসুবিধা যেমন  আছে, তেমন অনেক সময় ভুল বা বিকৃত তথ্যও প্রচারিত হতে পারে, যা দর্শকদের প্রভাবিত করতে পারে। কিছু অনুষ্ঠান শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার কারণে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। শারীরিক কার্যকলাপ কমে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে।

টেলিভিশন একটি শক্তিশালী মাধ্যম যার যেমন অনেক সুবিধা আছে, তেমনি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করলে শিক্ষা ও বিনোদন উভয় ক্ষেত্রেই দারুণ উপকার পাওয়া যায়, কিন্তু অতিরিক্ত এবং ভুলভাবে ব্যবহার করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।

লেখক ; সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)